দেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নে শিল্পায়নের বিকল্প নেই। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর এ উপলব্ধি থেকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারও বলে আসছে, তারা দেশজুড়ে শিল্পবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। চায় কোনো বাধা ছাড়াই শিল্পের বিস্তার ঘটুক। শুধু তাই নয়, কলকারখানায় দেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে একশটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার পথেও অনেকটাই এগিয়ে গেছে সরকার। শিল্প কলকারখানার মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে জ্বালানি।
জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সরকার তাই ক্রমেই আমদানির দিকে ঝুঁকতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে এখন ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি হচ্ছে। সরকারের যে পরিকল্পনা তাতে ভবিষ্যতে এলএনজির আমদানি আরও অনেক বেড়ে যাবে। শুধুু গ্যাসই নয়, তেল ও কয়লাসহ অন্যান্য জ্বালানির ক্ষেত্রেও দেশের আমদানিনির্ভরতা বাড়ছে। অথচ দেশের মূল ভূখণ্ডে গ্যাস ও কয়লার খনি থাকার সমূহ সম্ভাবনা সত্ত্বেও এ সবের অনুসন্ধানে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
আরও হতাশাজনক খবর হচ্ছে, প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমার ২০১৪ সালের পর তাদের সমুদ্রসীমা থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশ এখনো নিজ সমুদ্রসীমায় কার্যত অনুসন্ধানই শুরু করতে পারেনি। নিজ দেশে সুলভ জ্বালানির সন্ধানে মনোনিবেশ না করে উচ্চমূল্যে আমদানিকৃত জ্বালানির প্রতি অধিক গুরুত্বারোপের কারণে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের ৯০ শতাংশের বেশি হবে আমদানিনির্ভর। এতে জাতীয় অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পিছিয়ে পড়বে দেশ। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা পড়ে যাবে হুমকির মুখে। সর্বোপরি মারাত্মক বাধাগ্রস্ত হবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়লেও কমছে মজুদ। তাই চাহিদা পূরণে এখন বড় ভরসা আমদানিকৃত লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি)। একদিকে দেশীয় গ্যাস ক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন কমছে, অন্যদিকে দেশে নতুন করে কোনো সম্ভাবনাময় গ্যাস ক্ষেত্রও আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে এখন নতুন নতুন গ্যাসনির্ভর শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহের নিশ্চিত করতে আমদানিকৃত এলএনজি গ্যাসের দিকে তাকিয়ে আছে সরকার।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশ তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলার কাজের ধীরগতি এবং যথযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণে কালক্ষেপণ নতুন করে তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন থমকে আছে। দীর্ঘসময় ধরে ঝুলে আছে সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমও। ফলে দেশীয় উৎস কমে আসায় গ্যাসভিত্তিক শিল্পায়নের চাকা সচল রাখতে ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানির বিকল্প কোনো রাস্তা খোলা নেই। এদিকে শুধু গ্যাস নয়, চাহিদা দেশের সব প্রাথমিক জ্বালানিই আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কয়লা, জ্বালানি তেল, এলএনজি এমনকি পারমাণবিক ফুয়েলও।
অস্ট্রোলিয়া প্রবাসী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সূফী আমাদের সময়কে বলেন, আমলানির্ভর পেট্রোবাংলা দিনদিন পিছিয়ে পড়ছে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হিসেবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তারা মূলত সময় পার করতে আসেন। কোনো ঝুঁকি নিতে চান না। তাদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিতে অক্ষমতার কারণে দেশের তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। তার মতে, পেট্রোবাংলায় দক্ষ প্রকৌশলীদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। যারা করপোরেশনটির কাজ বুঝবেন। দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।
এদিকে দেশীয় জ্বালানি উৎস থাকা সত্ত্বেও সব কিছুই ব্যয়বহুল আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরাও উদ্বিগ্ন। তারা মনে করেন আমদানিকৃত এলএনজির কারণেই গ্যাসের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। এ ছাড়া দেশের অধিকাংশ জ্বালানি যেমন- কয়লা, জ্বালানি তেলসহ সব কিছু আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ায় ভবিষতে জ্বালানি খাত আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন তারা। ইতিপূর্বে এলএনজির দাম পরিশোধ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সরকারি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো। তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা যায়, ইতিপূর্বে সঞ্চিত কোষাগারে হাত দিতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে এলএনজির মূল্য পরিশোধে। শুধু তাই নয়, কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকায়ও হাত পড়েছে উচ্চমূল্য এলএনজির বিল পরিশোধে।
এদিকে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত একটি সম্ভাব্য চাহিদা তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য এককভাবে গ্যাসের চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে ১৩২০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসের সংকটে একাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধও রাখতে হচ্ছে বলে তথ্যসূত্রে জানা যায়।
প্রসঙ্গত প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকটের কথা বিবেচনা করে ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। পেট্রোবাংলার তথ্যানুযায়ী এখন প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘটফুট এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে প্রতিদিন চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
এ বিষয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, দেশের শিল্পায়নে চাহিদা পূরণ করতে গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। এখন যেহেতু আমাদের নিজস্ব গ্যাসের উৎস সীমিত, ফলে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা কাতার, ওমানসহ কয়েকটি দেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করছি। সামনের দিকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনে তা সরবরাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশীয় উৎসগুলোতে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্যও কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে একাধিক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চাহিদার তুলনায় দেশে উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের স্বল্পতাই আমদানির মূল কারণ। প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা যে গতিতে বাড়ছে উৎপাদন সেই গতিতে বাড়ছে না। ফলে আমদানি করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। তবে ভিন্নমতও প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, সরকারের ভুল পরিকল্পনা, অপব্যয় ও দুর্নীতির কারণেই জ্বালানি খাত আমদানিনির্ভর হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনা করে নিজেদের তেল গ্যাস অনুসন্ধান করলে এতদিনে অনেক বেশি সুফল পাওয়া যেত। কিন্তু সরকারের একটি পক্ষ আমদানিতেই আগ্রহী বেশি।
সরকারের পরিকল্পনায় দেখা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে ২০২১, ২০৩১ ও ২০৪১ সালে হবে যথাক্রমে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ৪০ হাজার মেগাওয়াট ও ৬০ হাজার মেগাওয়াট। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫০ শতাংশ আসবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে। এ ছাড়া গ্যাসের চাহিদা পূরণের বিরাট অংশ দখল করে আছে আমদানিকৃত এলএনজি। এ ছাড়া তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তো রয়েছেই। এখন বিপিসি ছাড়াও বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকরা সরাসরি জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে। তবে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে সব ক্ষেত্রেই প্রাথমিক জ্বালানি হবে আমদানিনির্ভর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বারবার এমন কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত অনুসন্ধানের অভাবে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রের মজুদ বৃদ্ধি ও নতুন মজুদ যোগ করে এ ঘাটতি মেটানো যেতে পারে, যা অতীতে করা হয়েছে। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান পরিণত পর্যায়ে যায়নি।
অধ্যাপক বদরুল ইমামের মতে, মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় অযৌক্তিক। দেশের মূল ভূখ-ে বড় আকারের প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। সমুদ্রে প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় আকারের মজুদ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সরকারের গ্যাস সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান ২০১৭ অনুযায়ী, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার তুলনায় ঘাটতির পরিমাণ বছরে প্রায় ১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার (এলএনজির হিসাবে যা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন টন)। ২০১৮ সালে গ্যাসের মোট চাহিদার ১৭ ভাগ এলএনজি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে যা ২০২৩ সালে দাঁড়াবে ৪০ ভাগ, ২০২৮ সালে দাঁড়াবে ৫০ ভাগ এবং ২০৪১ সালে দাঁড়াবে ৭০ ভাগ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেই হিসাবে ২০৪১ সালে এলএনজি আমদানির পরিমাণ প্রতিবছর ৩০ মিলিয়ন টন হতে পারে।
সরকার ইতোমধ্যে কাতার ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে এলএনজি আমদানির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে সই করেছে। বর্তমানে মধ্যমেয়াদি চুক্তিতে এবং খোলাবাজারেও (স্পট মার্কেটে) প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পর্যাপ্ত এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সরকার বিগত সময়গুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ালেও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহে সক্ষমতা অর্জন করেনি। বরং অধিকতর ব্যয়সাপেক্ষ জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। তার ফলে বেড়েছে বিদ্যুতের দাম।
দীর্ঘ সময় ধরে স্বল্পমূল্যের প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভর করে অর্থনীতির চাকা চালু রাখলেও ২০১০ সাল পরবর্তী সময়ে গ্যাসসংকট প্রকট আকার ধারন করে। এতে করে আমদানিকৃত তেলের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যায় যা থেকে এ পর্যন্ত বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিকটন জ্বালানি তেল আমদানি করতে হয়। ফলে আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লেই দেশীয় বাজার অস্থির হয়ে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যদি ব্যয়সাধ্য এলএনজি আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে৬ নির্ভরশীল হতে হয়, নির্মিতব্য বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যদি শুধু আমদানি করা কয়লার ওপর নির্ভরশীল হয়, এ ছাড়া আমদানি করা তেলের ওপর বাড়তি নির্ভরশীলতা কমানো না যায় এবং যদি ভবিষতে দেশীয় জ্বালানি উৎস ব্যাপকভাবে চিহ্নিত করা না যায়, তবে নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের ৯০ শতাংশের বেশি হবে আমদানিনির্ভর। এতে জাতীয় অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় এখনো সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করা যায়নি। ২০১৪ সালের পর মিয়ানমার ও ভারত তাদের সমুদ্রসীমায় গ্যাসসম্পদ আবিষ্কার ও আহরণ করছে। বাংলাদেশ তার সমুদ্রসীমায় আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে পারেনি এখনো। এ ছাড়া ভূখ-ে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমও হতাশাজনক। বাপেক্স গত বছর ১০০ কূপ খনন করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। সেটাও শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে গেছে।
দেশে মোট গ্যাস উৎপাদনের মধ্যে এখন আন্তর্জাতিক তেল গ্যাস কোম্পানির (আইওসি) ৫৯ ভাগ এবং দেশীয় কোম্পানিগুলো ৪১ ভাগ গ্যাস উৎপাদন করছে। দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪০০ কোটি ঘনফুটের স্থলে প্রতিদিনের সরবরাহ করা হচ্ছে ৩২০ কোটি ঘনফুট। এ ঘাটতি মেটাতে গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশের স্থলভাগে গ্যাসের যে মজুদ আছে তা ২০২১ সালের পর থেকে কমতে শুরু করবে। এ ছাড়া দেশে গ্যাসের অনুসন্ধান কার্যক্রমও জোরালো নয়। সমুদ্রেও গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম আশাব্যঞ্জক নয়। ২০১৪ সালে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মিটলেও বাংলাদেশ এখনো সমুদ্র সম্পদের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।
বাংলাদেশের নিজস্ব কয়লাসম্পদ মাটির নিচে রেখে আমদানিনির্ভর কয়লা দিয়ে চলছে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের মজুদ কয়লার উত্তোলন নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। জামালগঞ্জের কয়লা খনি থেকে গ্যাস উত্তোলন সম্ভাবনার একটি জরিপের ফলও নেতিবাচক হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা অনেকটাই হুমকির মুখে।
জ্বালানি বিভাগের তথ্যমতে, দেশে আবিষ্কৃত ২৬টি গ্যাসক্ষেত্রে মজুদ ২৭ দশমিক ১২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস। এর মধ্যে ১৪ টিসিএফ গ্যাস ব্যবহৃত হয়েছে। বাকি মজুদ আগামী ৮ থেকে ১০ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
Leave a Reply